কেবল সৌন্দর্য নয়, মুলা শাকের স্বাদও অনেকটাই নির্ভর করে কুচি করার ওপরে। শীত ও বসন্তের অন্যতম জনপ্রিয় সবজি হচ্ছে মুলা ও মুলার শাক। তবে হ্যাঁ, যতটা বিখ্যাত ঠিক ততটাই কিন্তু কুখ্যাত এই শাক ও সবজিটি। কেন? কারণ আর কিছুই নয়, মুলার বিখ্যাত গন্ধ। অনেকের নাকে সেটা সুগন্ধ মনে হলেও, অনেকের কাছেই কিন্তু মারাত্মক দুর্গন্ধ।
ছেলেবেলায় দাদী বলতেন, মুলার সুগন্ধ-দুর্গন্ধ নাকি বদলে যায় রান্না করার পদ্ধতির ওপরে। পেশাদার শেফ হবার সুবাদে আমারও কিন্তু মনে হয় কথাটি ঠিক। কেননা, কেবল রান্না করার কৌশলে পরিবর্তন এনেই দুর্গন্ধ যুক্ত মুলাকে করে তোলা সম্ভব দারুণ সুস্বাদু। সঠিক রেসিপিতে রান্না করতে পারলে মুলা শাকে একটুও দুর্গন্ধ তো হবেই না, বরং ছোট-বড় সকলেই খুব মজা করে খাবে।
কীভাবে?
চলুন, আজ তাহলে শিখে নিই নানী-দাদীদের আমলের সেই রেসিপিটি।
উপকরণ
মুলা শাক ২ আঁটি
রসুন ৫/৬ কোয়া (বড় আকারের)
পিঁয়াজ কুচি ২ টি ছোট দেশি পিঁয়াজ
এক চিমটি হলুদ
স্বাদমত লবণ
৫/৬ টি শুকনো মরিচ
আর কুচো চিংড়ি ইচ্ছামত (একটু বেশি দিলে মজাও বেশি হবে)
তেল ২ টেবিল চামচ
প্রণালি
-মূল শাক রান্নার একটা জরুরী পর্ব হচ্ছে শাক কুচি করা। যত মিহিন কুচি হবে, আপনার শাক ভাজা হবে তত সুস্বাদু। এই শাক কুচি করার পর আর ধোয়া যায় না। তাই শাক গুলিকে কাটার পূর্বেই খুব ভালো করে ধুয়ে নিন। তারপর যতটা সম্ভব মিহিন কুচি করে কাটুন। পাতা ও ডাঁটা সবই কুচি করে নিন। একই সাথে পিঁয়াজ ও রসুনও মিহিন কুচি করে কেটে নিন।
- এবার কড়াইতে শাক, এক চিমটি হলুদ, লবণ ও চিংড়ি মাছ দিয়ে চুলোয় চাপিয়ে দিন। আঁচ মাঝারি রাখুন। খুব বেশি আঁচে শাক রান্না করলে সকল পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। কিছুক্ষণের মাঝেই দেখবেন শাক থেকে পানি ছেড়ে দিচ্ছে এবং শাক পরিমাণে কমতে শুরু করেছে।
-পানি যখন প্রায় টেনে আসবে, সেই সময়ে আরেকটি কড়াই চুলোয় দিন। এতে দিয়ে দিন তেল। তেল একটু গরম হলেই শুকনো মরিচ ও পেঁয়াজ কুচি যোগ করুন। কিছুক্ষণ ভাজা হলে রসুন যোগ করুন। রসুন পরে দেবেন কারণ এটা খুব সহজেই পুড়ে যায় আর পুড়ে গেলে খাবার তেতো হয়ে যাবে।
-রসুন হালকা সোনালি রঙ ধরলেই তেল-পেঁয়াজ-রসুন-শুকনো মরিচের সম্পূর্ণ মিশ্রণটি ঢেলে দিন শাকের মাঝে। ঠিক যেভাবে আমরা ডালে বাগার দিই, ঠিক সেভাবেই। আওয়াজও উঠবে ডাল বাগারের মতই। ভালো করে মিশিয়ে নিন।
-এবার মাঝারি শাক ভাজা ভাজা করে নামিয়ে নিন। পরিবেশন করুন গরম গরম। ফ্রিজে রেখেও ৪/৫ দিন খেতে পারবেন। এভাবে করা শাক ভাজি সহসা নষ্ট হয় না।
রেসিপিটি প্রকাশিত হয়, ২৯ জানুয়ারি ২০১৮