ইফতার নিয়ে পুরোনো ঢাকার মানুষদের নিয়ে এমনিতেই অনেক সুনাম ও গাল-গল্প রয়েছে। আর পুরান ঢাকার চকবাজারের কথা তো নতুন করে কিছু বলার নাই। তবে রমজান মাসে চকবাজারে ইফতার কিনতে গেলে যে কথাটি সবচেয়ে বেশি শোনা যায়, ‘বড় বাপের পোলায় খায়, ঠোঙা ভইরা লইয়া যায়।’
রকমারি ইফতার বাজারের জনপ্রিয় আইটেম আর খানদানি ইফতারি মানেই পুরান ঢাকার ইফতার সামগ্রী। মোগল আমলের ঐতিহ্যের ছাপ ও ছোঁয়ার এসব ইফতারি কালক্রমে সব এলাকায় ছড়িয়ে পড়লেও এই আইটেমটির মর্যাদা ওই এলাকাতেই।
অনেকেই আছেন যারা চকবাজারের ইফতারের কথা বিশেষ করে বড় বাপের পোলায় খায়, এর কথা শুনে থাকলেও দূরত্ব, রাস্তা ও যানজটের কথা চিন্তা করে মন থেকে বাদ দিয়ে দেন। কিন্তু, অনেক ভোজন রসিক আছেন যারা একবার হলেও চেখে দেখতে চান এই ‘বড় বাপের পোলায় খায়, ঠোঙা ভইরা লইয়া যায়’ ইফতার। আমাদের আজকের আয়োজন তাদের জন্যই।
আসুন তাহলে আজ আমরা জেনে নেই কি কি দিয়ে তৈরি করা হয় পুরান ঢাকার চকবাজারের ঐতিহ্য ‘বড় বাপের পোলায় খায়, ঠোঙা ভইরা লইয়া যায়’—
‘বড় বাপের পোলায় খায়’। ঐতিহ্যবাহী এই পদটি তৈরিতে ডিম, গরুর মগজ, আলু, ঘি, কাঁচা ও শুকনো মরিচ, মুরগি-কবুতর-কোয়েল, খাসির মাংস, গরুর কলিজা, মুরগির মাংসের কুচি, মুরগির গিলা কলিজা, সুতি কাবাব, মাংসের কিমা, চিড়া, ডাবলি, বুটের ডাল, মিষ্টি কুমড়াসহ ১৫ পদের খাবার আইটেম ও ১৬ ধরনের মসলা প্রয়োজন। আর মোট ৩১টি পদের যে মিশ্রণ তৈরি হয়, তার নামই ‘বড় বাপের পোলায় খায়’।
মশলার মাঝে থাকে, পেঁয়াজ কুঁচি, পেঁয়াজ বেরেস্তা, ধনে পাতা, পুদিনা পাতা, আদা কুঁচি, ভাজা ধনে গুঁড়া, ভাজা জিরা গুঁড়া, ঘি, বাদাম, সরিষার তেল, টমেটো, কাঁচা মরিচ, শশা, গরম মসলা ভাজা গুঁড়া করা, লবণ শুকনা মরিচ, তেজপাতা ভাজা গুঁড়া।
ঘ্রাণের জন্য উপকরণ: (যদি ইচ্ছা হয় তাহলে ঘ্রাণের জন্য মাখানোর সময় এই মসলাগুলো সব ভেঁজে গুঁড়ো করে অল্প পরিমাণে মিশিয়ে নিতে হবে) এলাচি, দারুচিনি, লবঙ্গ, গোলমরিচ, মেথি, জায়ফল, জয়ত্রী, রাঁধুনি, জৈন, মৌরী।
বর্তমানে মূল্য প্রতিকেজি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা পর্যন্ত। তবে চকবাজারের সব দোকানিরা আবার শুধুমাত্র তারাই ‘আসল’ ‘বড় বাপের পোলায় খায়’ বিক্রি করছেন এমনটি দাবি করে কেজিপ্রতি দাম হাঁকান ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা।
সূত্রঃ পরিবর্তন