Friday, July 20, 2012

ঢাকাই ইফতারি







গরুর মাংসের চাপ
উপকরণ: হাড়ছাড়া মাংস ১ কেজি, পেঁয়াজবাটা ১ কাপ, আদা ২ টেবিল-চামচ, রসুন ২ টেবিল-চামচ, হলুদ ১ টেবিল-চামচ, মরিচ ২ টেবিল-চামচ, ধনে গুঁড়া ১ টেবিল-চামচ, জিরা ১ টেবিল-চামচ, দারুচিনি, এলাচি, তেজপাতা পরিমাণমতো, টক দই ১ কাপ, তেল পরিমাণমতো।

প্রণালি: মসলাসহ সব ধরনের উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। এবার মাংস ভালো করে ধুয়ে সব মসলা মিশিয়ে তিন থেকে চার ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। হাঁড়িতে সেদ্ধ করে নিন। তারপর নামিয়ে একটা কড়াইয়ে গরম তেলে লাল করে ভাজলেই গরুর মাংসের চাপ হয়ে যাবে। মাংসের ওপর ভাজা পেঁয়াজ ছিটিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।

হালিম
উপকরণ: মুগডাল আধা কেজি, মাষকালাইয়ের ডাল আধা কেজি, হাড়সহ মাংস দেড় কেজি, আদাবাটা ১ টেবিল-চামচ, আদা কুচি পরিমাণমতো, পেঁয়াজবাটা আধা কাপ, হলুদ ১ চা-চামচ, পাঁচফোড়ন, মরিচ, ধনেবাটা, লবণ, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো। তেজপাতা ২টা, দারুচিনি ৫-৬টা, এলাচি ৪-৫টা

প্রণালি: দুই কাপ পানিতে মসলা মিশিয়ে মাংস সেদ্ধ করুন। এরপর ভালো করে কষিয়ে নামিয়ে রাখুন। পেঁয়াজবাটা, পাঁচফোড়ন গুঁড়া, অন্যান্য মসলার গুঁড়াসহ কড়াইয়ে ভেজে নিয়ে আলাদা পাত্রে রাখুন। এবার দুই রকম ডাল ভালো করে ধুয়ে ছয় কাপ পানি দিয়ে সেদ্ধ করুন। প্রায় দুই থেকে তিন ঘণ্টা সেদ্ধ করতে হবে। প্রয়োজন হলে আরও পানি দিতে হবে। ডাল ভালোমতো সেদ্ধ হলে ডালঘুঁটনি দিয়ে ভালোমতো ঘুঁটে দিতে হবে। এবার ডালের সঙ্গে মাংস মিশিয়ে গুঁড়া মসলা দিয়ে আরও আধা ঘণ্টা মৃদু জ্বাল দিন। মাঝেমধ্যে নেড়ে দিতে হবে। গরম তেলে পেঁয়াজ কুচি লাল করে মরিচ দিয়ে ভেজে নিতে হবে। তারপর বাটিতে হালিম ঢেলে পেঁয়াজ কুচি, ধনেপাতা কুচি ও আদা কুচি মিশিয়ে গরম গরম পরিবেশন।

দইবড়া
উপকরণ: মাষকালাইয়ের ডাল আধা কেজি, তেল (১ কাপ), ধনে গুঁড়া, লবণ, জিরা, গোলমরিচ, শুকনা মরিচ পরিমাণমতো, চিনি বা গুড় ২ টেবিল-চামচ, দই আধা কেজি।

প্রণালি: ডাল ছয়-সাত ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। এবার জিরা, ধনে, গোলমরিচ ও শুকনা মরিচ একসঙ্গে তেলছাড়া ভেজে নিন। ডাল বেটে নিন। বাটা ডাল সামান্য পানি দিয়ে ভালো করে ফেটে নিন। একটা গামলায় ছয় কাপ পানি ও দুই চামচ লবণ মেশান। কড়াইয়ে তেল দিন, গরম হলে অল্প অল্প ডাল নিয়ে চ্যাপ্টা আকারের বড়া তৈরি করুন এবং গরম তেলে ভাজুন। বড়া যদি না ফুলে ওঠে, তবে সামান্য পানি দিয়ে ডাল ভালো করে আবার ফেটে নিন। একটি পাত্রে অল্প পানি দিন, তাতে তৈরি বড়া ছেড়ে দিন। এবার দই ব্লেন্ড করুন। বেশি ঘন হলে পানি দিয়ে পরিমাণ ঠিক করুন। ব্লেন্ড করা দইয়ের সঙ্গে গুড়, লবণ ও গুঁড়া মসলা মিশিয়ে নিন। এবার বড়া পানির পাত্র থেকে তুলে পানি ঝরিয়ে একটি পাত্রে রাখুন। বড়ার ওপর দই ঢেলে ওপরে গুঁড়া মসলা ছিটিয়ে দিন। বড়া নরম খেতে চাইলে তিন-চার ঘণ্টা দইয়ে ভিজিয়ে রাখতে হবে। ফ্রিজেও রাখতে পারেন। তাহলে স্বাদে ভিন্ন মাত্রা পাবেন।

ডিমচপ
উপকরণ: ডিম ৫টা, আলু আধা কেজি, পেঁয়াজ ২টা, গোলমরিচ গুঁড়া পরিমাণমতো, লবণ পরিমাণমতো, বিস্কুটের গুঁড়া পরিমাণমতো।

প্রণালি: আলু ধুয়ে সেদ্ধ করুন। সেদ্ধ আলু পানি ঝরিয়ে খোসা ছাড়িয়ে চটকে নিতে হবে। এবার চটকানো আলুর সঙ্গে লবণ, গোলমরিচ ও চিনি মিশিয়ে নিন। চটকানো আলু আট ভাগ করুন। প্রতিটির ভেতর ডিম দিয়ে গোলাকার বা ইচ্ছামতো আকারের চপ তৈরি করুন। চপ তৈরি হলে একটি বাটিতে ডিম ফেটে নিন। ফেটানো ডিমের সঙ্গে তৈরি ডিমের চপগুলো বিস্কুটের গুঁড়ার সঙ্গে মিশিয়ে ডুবোতেলে ভেজে গরম গরম পরিবেশন।

মাংসের কিমা ও পাউরুটির কাটলেট
উপকরণ: কিমা আধা কেজি, পাউরুটি ৪-৫ টুকরা, আলু সেদ্ধ ৪টা, কাঁচা মরিচ কুচি ৬-৭টা, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, পুদিনাপাতা কুচি পরিমাণমতো, গোলমরিচ গুঁড়া ১ চা-চামচ, স্বাদলবণ পরিমাণমতো, চিনি ২ চা-চামচ, কাটলেট ভাজার জন্য তেল পরিমাণমতো।

প্রণালি: আলু ও মাংসের কিমা আলাদা করে সেদ্ধ করে নিন। সব মসলা ধনেপাতাসহ চটকে নিন। পাউরুটি পানি দিয়ে ভিজিয়ে চটকে নিন। এবার পাউরুটি কিমাসহ সব উপকরণ একসঙ্গে মেখে নিন। পরে কাটলেট তৈরি করুন। ডিম ভালো করে ফেটে নিন। ফেটানো ডিমে কাটলেটগুলো বিস্কুটের গুঁড়ায় গড়িয়ে ভাজুন এবং গরম গরম পরিবেশন করুন।

ঝলসানো মোরগ
উপকরণ: মোরগ ১টা, পেঁপেবাটা ৪ চা-চামচ, আদা ২ চা-চামচ রসুন আধা চা-চামচ, মরিচ ১ চা-চামচ, হলুদ আধা চা-চামচ, দারুচিনি পরিমাণমতো, এলাচি ২টা, লবণ পরিমাণমতো, একটা লেবুর রস, সরিষার তেল ৪ টেবিল-চামচ।

প্রণালি: মোরগ কেটে আট বা চার টুকরা করুন। টুকরা করা মোরগ পেঁপে, আদা, রসুন ও লবণ দিয়ে ৮ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। এবার প্রতি টুকরা মাংসের গায়ে চাকু দিয়ে চার থেকে পাঁচটি দাগ কাটতে হবে। সব মসলা ও তেল মাংসের সঙ্গে মিশিয়ে আগুনে মাংসের দুই পিঠ ঝলসে নিয়ে সেদ্ধ বা খাবার উপযুক্ত হয়েছে কি না, দেখে প্লেটে নামিয়ে রাখুন এবং ঝলসানো মাংসের ওপর লেবুর রস ও সস দিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।

মসুর ডালের ঘুগনি
উপকরণ: মসুর ডাল ১ কেজি, খাবার সোডা ১ চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, শুকনা মরিচ ১০-১২টি, ধনেপাতা ও শসা পরিমাণমতো।

প্রণালি: ডাল ভালো করে ধুয়ে নিন। এবার দুই থেকে তিন ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। এরপর পরিমাণমতো পানি দিয়ে মসুর ডালে লবণ ও খাওয়ার সোডা দিয়ে সেদ্ধ করুন। ডাল সেদ্ধ হলে ধনেপাতা, শসা ও শুকনা মরিচ গুঁড়া দিয়ে গরম গরম পরিবেশন।

ছোলার ঘুগনি
উপকরণ: ছোলা আধা কেজি, লবণ পরিমাণমতো, খাওয়ার সোডা ১ চা-চামচ, শুকনা মরিচ ৮-১০টি, পেঁয়াজ ১ কাপ।

প্রণালি: ছোলা ভালো করে ধুয়ে খাওয়ার সোডা দিয়ে সেদ্ধ করুন। পেঁয়াজ কুচি ও শুকনা মরিচ ভেজে গুঁড়া করে নিন। সেদ্ধ ছোলার সঙ্গে পেঁয়াজ কুচি ও শুকনা মরিচের গুঁড়া মিশিয়ে পরিবেশন করুন।

ফুলুরি
উপকরণ: মসুর ডাল আধা কেজি, পেঁয়াজ কুচি ২ কাপ, হলুদবাটা আধা চা-চামচ, মরিচবাটা আধা চা-চামচ, কাঁচা মরিচ কুচি ৬-৭টা, পুদিনাপাতা কুচি পরিমাণমতো, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, লবণ পরিমাণমতো, ফুলুরি ভাজার তেল পরিমাণমতো

প্রণালি: ডাল ধুয়ে ডুবোপানিতে দুই-তিন ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। ভেজানো ডাল পানি ঝরিয়ে বেটে নিতে হবে। পেঁয়াজ কুচিসহ সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে। এবার কড়াইয়ে তেল গরম করতে হবে। চ্যাপ্টা করে ছোট আকারের ফুলুরি তৈরি করে ডুবোতেলে ভেজে গরম গরম মুড়ির সঙ্গে পরিবেশন।

চটপটি
উপকরণ: মটর ডাল আধা কেজি, আলু আধা কেজি, ডিম ২টা, তেঁতুল ১০০ গ্রাম বিচি ছাড়া, শুকনা মরিচ ১০টা, জিরা ১ টেবিল-চামচ, ধনে গুঁড়া ১ টেবিল-চামচ, রাঁধুনি ১ টেবিল-চামচ, মেথি ১ চা-চামচ, গোলমরিচ ২০টা, পাঁচফোড়ন ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ, ধনেপাতা কুচি, বিট লবণ, লবণ পরিমাণমতো।

প্রণালি: মটর ডাল ধুয়ে সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। সঙ্গে ১ চা-চামচ খাওয়ার সোডা দিলে ভালো হয়, তাহলে মটর তাড়াতাড়ি সেদ্ধ হবে। এবার তেঁতুল ধুয়ে ৩ কাপ পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখুন। তেঁতুলের সঙ্গে চিনি, লবণ, ভাজা জিরার গুঁড়া, মরিচের গুঁড়া, ২ চামচ তেল ও ১ কাপ পানি দিয়ে জ্বাল দিতে হবে। ঘন হলে নামিয়ে ফেলুন। আলু সেদ্ধ করে ছোট ছোট টুকরায় কেটে নিন। ভেজানো মটর সেদ্ধ করুন। সেদ্ধ হলে তার সঙ্গে আলু ও লবণ মিশিয়ে এক ঘণ্টা চুলায় রাখতে হবে। এর মধ্যে একটু তেঁতুলের পানি দিতে হবে। সঙ্গে পরিমাণমতো গুঁড়া মসলা, চিনি, লবণ ও বিট লবণ মেশাতে হবে। চটপটি তৈরি হয়ে গেছে। এবার বাটিতে ঢেলে গরম গরম পরিবেশন।

আলুচপ
উপকরণ: আলু আধা কেজি, পেঁয়াজ ২টা, লবণ পরিমাণমতো, পুদিনাপাতা পরিমাণমতো, আলুচপ ভাজার তেল পরিমাণমতো।

প্রণালি: আলু সেদ্ধ করে নিন। এবার আলুর খোসা ছড়িয়ে চটকে নিতে হবে। চটকানো আলুতে পেঁয়াজ কুচি, লবণ, কাঁচা মরিচ কুচি, ধনেপাতা কুচি, পুদিনাপাতা কুচি একসঙ্গে মিশিয়ে গোলাকার চ্যাপ্টা করে গরম তেলে ভেজে নিলেই আলুচপ হয়ে যাবে।

মাঠা-মাখন
উপকরণ: দুধ পরিমাণমতো, লবণ পরিমাণমতো, লেবু পরিমাণমতো।

প্রণালি: পরিমাণমতো দুধ জ্বাল দিয়ে ঠান্ডা করে নিতে হবে। তারপর একটি পাত্রে দইয়ের মতো পাততে হবে। দই বানানো হয়ে গেলে ওই দই বড় পাত্রে নিয়ে চরকা দিয়ে টানতে হবে। চরকায় টানার ফলে মাখন আলাদা হয়ে ওপরে জমাট হয়ে ভেসে থাকবে। আর নিচে থাকবে মাঠা। এবার মাঠা-মাখন আলাদা করে লবণ ও লেবু পরিমাণমতো মিশিয়ে পরিবেশন করুন।

মটরের ঘুগনি
উপকরণ: মটর ডাল ১ কেজি, লবণ পরিমাণমতো, খাওয়ার সোডা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা পরিমাণমতো, শুকনা মরিচ ১০-১২টি।

প্রণালি: মটর ভালো করে ধুয়ে ডুবোপানিতে রাতে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে খাওয়ার সোডা দিয়ে তিন-চার ঘণ্টা সেদ্ধ করুন। শুকনা মরিচ ভেজে গুঁড়া করুন। পেঁয়াজ কুচি করে ভেজে নিন। মটর ভালোমতো সেদ্ধ হলে তার ওপর পেঁয়াজ কুচি ভাজা, শুকনা মরিচের গুঁড়া দিয়ে পরিবেশন করুন।

ছানা
উপকরণ: দুধ পরিমাণমতো, চিনি পরিমাণমতো।

প্রণালি: ছানার পানি মিশিয়ে ছানা তৈরি করা সহজ। আগের দিনের ছানা চিপে পানি রেখে দিতে হয়। এবার দুধ জ্বাল দিন। সঙ্গে আগের দিনের ছানার পানি বা যেকোনো টক যেমন লেবুর রস কয়েক ফোঁটা মিশিয়ে দিন। একটু পর দেখবেন দুধ ছানায় রূপান্তরিত হয়েছে। এবার ওই ছানা প্লেটে ঢেলে দিলেই জমাট বেঁধে যাবে। জমাট বাঁধা ছানা কেটে চিনি দিয়ে পরিবেশন করুন।