Friday, December 7, 2012

শীতেই তো বারবিকিউ









শীত পড়েছে। বাড়ির ছাদে বারবিকিউ তো হবেই। আবার বেড়াতে গিয়েও চুলা ধরিয়ে দিব্যি বানিয়ে ফেলতে পারেন ঝলসানো নানা খাবার।
ফাতিমা আজিজ দিয়েছেন তারই রেসিপি।

গ্রিলড চিংড়ি
উপকরণ: মাথা ও খোসা ছাড়ানো বড় চিংড়ি মাছ ১৫০ গ্রাম বা ১২টি, রসুনবাটা সিকি চামচ, লেবুর রস ১ চা-চামচ, পেঁয়াজবাটা ২ চা-চামচ, লবণ সামান্য, কাঁচা মরিচবাটা আধা চা-চামচ, মাল্টা বা কমলার রস ২ টেবিল-চামচ, মাল্টা বা কমলার খোসা মিহি কুচি আধা চা-চামচ, লেবুর খোসা মিহি কুচি আধা চা-চামচ, লেবু ও কমলা বা মাল্টার খোসা লম্বা ঝুরি করে পরিমাণমতো (সাজানোর জন্য), মাখন ১ টেবিল-চামচ, শাসলিক কাঠি ভেজানো প্রয়োজনমতো।
প্রণালি: মাখন, লবঙ্গের গুঁড়া, কমলা বা মাল্টার খোসা ও লেবুর খোসা ঝুরি বাদে অন্য সব উপকরণ একটি বাটিতে নিয়ে চিংড়িগুলো মেখে ঘণ্টা খানেক ফ্রিজে রাখুন। এবারে একেকটি কাঠিতে তিনটি করে চিংড়ি মাছ গাঁথুন। একটি গ্রিল ট্রেতে আধা টেবিল-চামচ মাখন ব্রাশ করে এর ওপর কাঠিগুলো সাজিয়ে ওপর থেকে বাকি মাখন ব্রাশ করে দিন। প্রি-হিটেড ওভেনে ১৮০ ডিগ্রি সেলসিলাস তাপে ১৫ থেকে ২০ মিনিট গ্রিল করুন। মাঝে একবার কাঠি ঘুরিয়ে দিয়ে সামান্য মাখন ব্রাশ করে দিন। যেকোনো চাটনির সঙ্গে গরম গরম পরিবেশন করুন।

গ্রিল সবজি
উপকরণ: পনির অথবা টফু (২ ইঞ্চি কিউব করে কাটা) ৫০০ গ্রাম, ধনেপাতা কুচি ১ মুঠি, পুদিনাপাতা কুচি ১ মুঠি, কাঁচা মরিচ কুচি ৪টি, রসুন ১০ কোয়া, আদা কুচি সামান্য, লেবুর রস ২ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ২টি, ডালিমের দানা ২ টেবিল-চামচ, লবণ ১ চা-চামচ, পানি ঝরানো টক দই ১ কাপ, ভাজা বেসন ৪ টেবিল-চামচ, শুকনো মেথি শাকের পাউডার (কসৌরি মেথি) ২ টেবিল-চামচ, তাবাস্কো পেপার সস ১ টেবিল-চামচ, শুকনা মরিচ গুঁড়া ১ টেবিল-চামচ, চাট মসলা দেড় চা-চামচ, ভাজা জিরার গুঁড়া ২ চা-চামচ, গরম মসলার গুঁড়া ২ চা-চামচ, সরিষার তেল ২ টেবিল-চামচ, পেঁয়াজ ৬টি (চার টুকরা করে কাটা), নানা রঙের ক্যাপসিকাম ১টি করে, শাসলিক কাঠি প্রয়োজনমতো (পানিতে ভেজানো)।
প্রণালি: কাঁচা মরিচ কুচি, ধনেপাতা ও পুদিনাপাতা কুচি, আদা-রসুন কুচি, পেঁয়াজ কুচি, লেবুর রস, লবণ, টক দই, ডালিমের দানা একত্রে ব্লেন্ডারে নিয়ে ভালো করে ব্লেন্ড করুন। পনির অথবা টফুর টুকরোগুলো শুকনো মেথি শাকের গুঁড়া, চাট মসলা, জিরা পাউডার, গরম মসলার গুঁড়া, ভাজা বেসন এবং তৈরি করা মসলার পেস্ট দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে এক টেবিল-চামচ সরিষার তেল দিয়ে মেখে নিন। এটি ডিপ ফ্রিজে দুই ঘণ্টা রেখে দিন। মাঝে দু-একবার নেড়ে দিন। শাসলিকের কাঠি নিয়ে প্রথমে সবুজ ক্যাপসিকাম, তারপর লাল ক্যাপসিকাম, পেঁয়াজ, পনির বা টফুর টুকরো গেঁথে নিন। আবারও এভাবে গাঁথুন। গ্রিল প্যানে বাকি তেল গরম করে কড়া জ্বালে চারটি করে কাঠি বিছিয়ে গ্রিল করুন দু-তিন মিনিট। একটু পোড়া পোড়া হতে পারে।

গ্রিল চিকেন কাটলেট
উপকরণ : হাড়ছাড়া মুরগির মাংস ৫০০ গ্রাম বা ৪ থেকে ৫টি, লেবুর রস অথবা সিরকা ১ টেবিল-চামচ, সিজেনিং সস ১ টেবিল-চামচ, লবণ আধা চা-চামচ অথবা স্বাদ অনুযায়ী, আদা-রসুনের রস ১ টেবিল-চামচ, ডিমের সাদা অংশ ১টি, গোলমরিচ গুঁড়া সিকি চামচ, কাঁচা মরিচবাটা আধা টেবিল-চামচ, কর্নফ্লাওয়ার ১ টেবিল-চামচ, ব্রেড ক্রাম্ব ১ কাপ, তেল ২ টেবিল-চামচ, টক দই ৩ টেবিল-চামচ, লাল মরিচের গুঁড়া আধা টেবিল-চামচ।
প্রণালি: মাংসগুলো ভালো করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে এর ওপর ছুরি দিয়ে বরফির মতো করে আঁক দিন। বাটিতে ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে কর্নফ্লাওয়ার ও সিকি চামচ লবণ দিয়ে ভালো করে ফেটে ব্যাটার বানিয়ে নিন। ট্রেতে তেল বাদে বাকি সব উপকরণ একত্রে নিয়ে মাংসে মেখে দুই থেকে তিন ঘণ্টা মেরিনেট করে রাখুন। এরপর মাংসগুলো ব্যাটারে চুবিয়ে ব্রেড ক্রাম্বে গড়িয়ে নিন। গ্রিল প্যানে তেল গরম করে মুরগির টুকরোগুলোকে উল্টে-পাল্টে গ্রিল করুন। সামান্য তেল মাংসে ব্রাশ করে উল্টে দিয়ে আরও ২০ মিনিট গ্রিল করুন। ফ্রেঞ্চ ফ্রাইস, সালাদ অথবা মিক্সড সবজির সঙ্গে পরিবেশন করুন।

বারবিকিউ চিকেন উইথ ক্যাপসিকাম
উপকরণ: হাড়ছাড়া মোরগের বুকের মাংস (কিউব করে কাটা) ৮০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি, লবণ ২ চা-চামচ অথবা স্বাদ অনুযায়ী, চিনি ২ চা-চামচ অথবা স্বাদ অনুযায়ী, সরিষা ভেজে গুঁড়া করা দেড় চা-চামচ, গোলমরিচের গুঁড়া আধা চা-চামচ, আদাবাটা দেড় চা-চামচ, রসুনবাটা দেড় চা-চামচ, লাল মরিচের গুঁড়া দেড় চা-চামচ, টক দই আধা কাপ, অয়েস্টার সস আড়াই টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, সরিষার তেল আধা কাপ, গরম মসলা ভেজে ফাঁকি করা দেড় চা-চামচ, জায়ফল ভেজে গুঁড়া করা সিকি চামচ, জয়ত্রী ভেজে গুঁড়া করা আধা চা-চামচ, লবঙ্গ ভেজে গুঁড়া করা সিকি চামচ, লাল, হলুদ ও সবুজ ক্যাপসিকাম পরিমাণমতো (কিউব করে কেটে নেওয়া), পেঁয়াজ (৪ টুকরো করে কাটা) পরিমাণমতো, বারবিকিউ সস (যেকোনো শপিং মলে পাওয়া যাবে) পরিমাণমতো।
এ ছাড়া লাগবে কয়লা, বারবিকিউ করার জন্য শিক ও চুলা। চুলায় প্রথমে কয়লাগুলো বিছিয়ে সামান্য কেরোসিন ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে নিতে হবে।
প্রণালি: ক্যাপসিকাম, পেঁয়াজ ও বারবিকিউ সস বাদে অন্য সব উপকরণ একত্রে মিশিয়ে ছয় ঘণ্টা মেরিনেট করে রাখুন। দুই ঘণ্টা বাইরে রেখে বাকি চার ঘণ্টা ফ্রিজে রাখুন। শিকগুলো ধুয়ে তাতে তেল ব্রাশ করে প্রথমে তিন টুকরা করে মাংস, ক্যাপসিকাম, এক টুকরো পেঁয়াজ গাঁথুন। একইভাবে আরেকবার গাঁথুন। এভাবে চারটি শিক তৈরি করে চুলা জ্বালানোর পর ২০ মিনিট সময় দিন। টেবিল ফ্যান বা হাত পাখা দিয়ে বাতাস দিতে থাকুন, যেন কয়লার আগুন নিভে না যায়। ২০ মিনিট পর শিকগুলো চুলায় বসান। শিকগুলো ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেবেন ও বারবিকিউ সস দিয়ে ব্রাশ করে দিন মাঝেমধ্যে। যখন মুরগির টুকরোগুলো একটু পোড়া পোড়া হবে, তখন শিকগুলো চুলা থেকে বের করে বা উঠিয়ে পাঁচ মিনিট পর শিক থেকে সাবধানে বের করে ডিশে সাজিয়ে নিন অথবা পরোটার সঙ্গে গরম গরম পরিবেশন করুন।

বেড়াতে গেলে সব উপকরণ হয়তো জোগাড় করা যাবে না। শুধু কাবাব মসলা, লবণ ও মরিচের গুঁড়া দিয়েও বারবিকিউয়ের উপকরণ মেরিনেট করতে পারেন। আর ঝলসানোর সময় অল্প করে বারবিকিউ সস ব্রাশ করে দেবেন।

তথ্য সূত্র: প্রথম আলো পত্রিকা (তারিখ: ০৪-১২-২০১২)